প্রিয় পাঠক, আগের প্রকাশিত পোস্ট এ আপনারা পড়েছিলেন একজন বিচারকের নারী ধর্ষণের গল্প। এ পোস্ট এ পড়ুন একজন আইনজীবির শিশু ধর্ষণের গল্প
লেখাটা লিখতে গিয়ে পাকিস্তানের বিখ্যাত রাজনৈতিক নেতা ও পাকিস্তান স্বাধীনতার পথিকৃত কায়েদে আযম মুহাম্মাদ আলী জিন্নাহ- এর কথা এসে গেল। ১৮৭৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর পাকিস্তানের করাচীর খারাদার নামক স্থানে ধনাঢ্য, সম্ভ্রান্ত বর্ণাঢ্য এক মুসলিম পরিবারে তিনি জন্ম গ্রহণ করেন। বোম্বের গকুলদাস স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনের পর তিনি কিছুদিন করাচীর সিন্ধু মাদ্রাসায় ও পরে খ্রিস্টান মিশনারী স্কুলে পড়ালেখা করেন। এর পর বিলেত গমন করেন। পিতার ইচ্ছা ছিল পুত্র হিসাববিজ্ঞানে লেখাপড়া করবেন। পিতার ইচ্ছা মোতাবেক তিনি লন্ডনের কোনো এক স্কুলে হিসাব বিজ্ঞানে ভর্তি হয়েছিলেন। বিকেলে তার হাঁটাহাটির অভ্যাস ছিল। লিঙ্কন্স ইনের সামনে দিয়ে হাঁটছিলেন একদিন। লিঙ্কন্স ইনের ফটকে খোদাই করা ছিল –
‘Mohammad (S), the greatest lawyer of the World’ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও গ্রেট আইনবিদ।’ ব্যস, এই একটি কথা, বিধর্মীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইতিহাসের অন্যতম সত্য তথ্যের দ্বিধাহীন অলঙ্করণ দেখে মুগ্ধ হলেন কায়েদে আযম। সিদ্ধান্ত নিলেন মহানবীর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে আইন বিষয়ে পড়ালেখা করবেন। ইচ্ছা অনুযায়ী তিনি লিঙ্কন্স ইনে ভর্তি হলেন।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে একটিমাত্র তথ্য কায়েদে আযম ও পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতাকে এক শাশ্বত বিপ্লবের পথে নিয়ে এলো। এমনি মহান মহানবীর আদর্শ, ইসলামের দর্শন। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও ইনসাফগার আইনবিদ, বিচারক। নীতি-নৈতিকতা ছিল তার আইনের প্রধান ভাষ্য। মানবতাকে সারা জীবন তিনি আইন ও নৈতিকার পথে চলার সবক দিয়ে গেছেন। এতে বিমুগ্ধতা ছড়িয়েছে সারাবিশ্বে। একটি গোঁড়া ইসলামবিদ্বেষী রাষ্ট্রও তা নিজেদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গাত্রে অংকিত করতে দ্বিধা করে নি। কিন্তু আপসোসের বিষয় হলো বিধর্মীরা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শের কথা তাদের দেয়ালের গাত্রে অংকন করলেও আমরা আমাদের হৃদয়গাত্রে তা অংকন করতে পারিনি। একারণে সংঘটিত হচ্ছে নানা রকমের অবিশ্বাস্য ঘটনা। যা বিশ্বাস করতেই ব্যয় হয় অনেকক্ষণ।
যারা দেশের মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলবেন, হতভাগা ও মজলুমকে তাদের হক বুঝিয়ে দিতে সচেষ্ট হবেন আমরা তাদেরকে উকিল বা আইনজীবি হিসেবে জানি। মানবতার প্রশ্নে তাদের দায়িত্ব অনেক। তার সততা ও চরিত্রের ওপর নির্ভর করে মজলুমের ভাগ্য। আর অনৈতিকা ধ্বংস করে দেয় মজলুমের সব আশা-আকাঙ্ক্ষা। তাই একজন আইনজীবিকে অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ ও ইসলামী আদর্শে উজ্জীবিত হওয়া শুধু ধর্মের স্বার্থেই নয়, মানবতার স্বার্থেও অপরিহার্য। এই অপরিহার্য সত্তার অনুপস্থিতিতে বয়ে আনে চরম দুর্ভোগ। দুর্ভোগের যন্ত্রণায় ছটফট করে মানবতা, অসহায় অনাথ ও শিশু সন্তানেরাও। কথা বাড়াতে চাই না। পাঠক! চলুন আরেকটি অমানবিক ঘটনার ভাঙা ঘাটে আপনাকে ঘুরিয়ে নিয়ে আসি।
গাজীপুর জেলার জজ আদালতের সিনিয়র আইনজীবি ফরিদুল আলম (ছদ্মনাম)। আইন-আদালতে অভিজ্ঞতার ছড়ি ঘুরালেও সমাজ ও ঘরোয়া জীবনে একেবারে জাহিলী যুগের আনাড়ী লোকের মতো একটা কাজ করে বসলেন। কতদিন ধরে তা করে আসছেন তা আল্লাহ তা‘আলাই ভালো জানেন। কিন্তু তথ্য ফাঁস হওয়ার পর মনে হয়েছে দেশটা বুঝি কেবল অবিশ্বাস আর অভিনয়েরই জায়গা। যে লোকটা জনাকীর্ণ আদালতে বিচারক ও হাজার মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে নৈতিকার দোহাই দিয়ে বাদী কিংবা বিবাদীর পক্ষে কথা বলেন, সেই লোকটাই যখন আসল বিচারককে অনুপস্থিত ভেবে কারও সর্বনাশের চূড়ান্তটা ঘটান তখন তার ভেতর ও আদালতের সামনে উপস্থিত হওয়া চেহারা দুটোর মধ্যে মিল খুঁজে পেতে নিদারুণ কষ্ট হয়। অভাব আর দারিদ্রের সুযোগে মানুষ গ্রামাঞ্চল থেকে অসহায় অল্পবয়সী মেয়েগুলোকে নিয়ে আসে ঘরের কাজ করার জন্য। আনার সময় মা-বাবাকে আশ্বস্ত করে বলে- এটাতো আমাদেরই মেয়ে। আমাদের ছেলেমেয়ের সাথে ও বড় হবে, খাবে, নাবে ইত্যাদি।
বাক্যের চাণক্যে মুগ্ধ হন গ্রামের দরিদ্র সরল মা-বাবা। শহরের সুখের আশায় মেয়েটিকে বিদায় জানিয়ে মা-বাবা যখন তৃপ্তির শ্বাস নেন তখন সন্তানের ভাগ্যে জোটে খুন্তির দাগ, মালিকের স্ত্রীর চপেটাঘাত, চুলের মুঠির সাথে মালিকার যুদ্ধসহ হাজারও অপরিচিত নির্যাতন। আর কেউ কেউ হারিয়ে বসে নারীর সর্বশ্রেষ্ঠ অলঙ্কারটি। যে সম্পদ রক্ষায় গ্রামের সরল বধূ ও মেয়েরা নিজের জীবন বিলিয়ে দিতে কুণ্ঠিত হয়না, শহরে এসে দেখে সেই সম্পদ লুণ্ঠিত হতে মোটেও সময় লাগে না। পৃথিবীর বণিক শ্রেণীরা সম্ভবত দারিদ্রের সুযোগটাই বেশি নেয়। তাই তো দু মুঠো ভাত দেয়ার কথা বলে একটি সম্বলহীন অসহায় নারীর সর্বস্ব কেড়ে নেয় তারা। কেড়ে নেয় দীর্ঘদিনের লালন করা সম্ভ্রম। এমন কুৎসিত ঘটনা যে শহুরে জীবনে সর্বদা ঘটে চলেছে তা প্রকাশ করে রাজধানীর মানুষের প্রতি পাঠকদের বদধারণা তৈরি করতে চাই না। কিন্তু কখনও কখনও এমন ঘটনা ঘটে যা মানবতার সামনে প্রকাশ করে বেপর্দা ও উচ্ছৃঙ্খল জীবনের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করার দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া উচিত বলে মনে করি না। ফলে অনিচ্ছা সত্ত্বেও লিখি এসব কাহিনী।
আমাদের আলোচিত আইনজীবির কথায় আসুন। সুদূর ফরিদপুর থেকে একটি দশ বছরের মেয়েকে তিনি এনেছেন কাজের মেয়ে হিসেবে। যে মেয়েটির এখনও দুনিয়া চেনারই সময় হয়নি সেই মেয়েটিকেও আইনজীবি তীক্ত অভিজ্ঞতার সবক দিলেন! দশ বছরের শিশুটিকে ভয় দেখিয়ে বারবার ধর্ষণ করলেন! এতে শহরে এসে সচ্ছলতার স্বাদ পাওয়ার ইচ্ছা নিমিষেই মিশে যায় মেয়েটির। ঈদের দিন যেখানে সারাদেশের শিশু-বুড়োরা আনন্দে মেতে উঠেছে সেদিন একটি দশ বছরের শিশু অমানবিকতার গুয়ান্তানামোবে কারাগার থেকে পালিয়ে বেড়াবার প্রাণপণ কসরত করেছে! কারণ সেই আনন্দও পবিত্র দিনেও তার ওপর চালানো হয়েছে তার সাধ্যের বাইরের নির্যাতন। ঈদের আগের দিন ও পরের দিন দৈনিক ৬/৭ বার করে চালানো হয়েছে দৈহিক নির্যাতন! অপরাগ মেয়েটি জানের ভয়ে পালাতে চাইলে সেই জানটাই কেড়ে নেয়ার হুমকি দেয়া হতো!
অবশেষে সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় এবং পালিয়ে গিয়ে জনগণকে পুরো ঘটনা জানায়। ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল হক ঝিনুকের কাছে মেয়েটি জবাববন্দী দিয়েছে। হয়ত ম্যাজিস্ট্রেটের ফাইলেই চিরদিন বন্দী হয়ে থাকবে অসহায় মেয়েটির বিবৃত লোমহর্ষক নির্যাতনের করুণ উপখ্যান। কোনো এক অদৃশ্য শক্তির বলে হয়ত কোনো দিন বেরিয়ে আসবে না সেই চাঞ্চল্যকর তথ্য। কিন্তু তবু সেই অদৃশ্য ফাইলের অপ্রকাশিত উপাখ্যান থেকেই আমরা শিক্ষা নিতে চাই। মেয়েটির মতোই পালিয়ে বাঁচতে চাই মুক্তবাস থেকে, আযাদী যিন্দেগীর অভিশাপ থেকে। [তথ্যসূত্র : দৈনিক সমকাল ০৯/০৯/২০১১ইং]
আপনি পড়ছেনঃ মুক্তবাসিনী-২ বই থেকে।
The post আইনের হাত কোথায়! এক আইনজীবির শিশু ধর্ষণের গল্প appeared first on Amar Bangla Post.