গোপালের সবেমাত্র বিয়ে হয়েছে। এক বাদলার দিনে স্ত্রীকে দেখবার জন্যে তাঁর মন ছটফট করে উঠলো। নতুন বৌ তখন পিত্রালয়ে, শ্বশুরাবাড়িও প্রায় দু’ক্রোশের উপর।
গোপাল ওই বাদলাতেই দুই ক্রোশ পথ ভেঙ্গে সন্ধ্যা নাগাদ শ্বশুরবাড়ীতে পৌঁছাল। জামাইকে পেয়ে শ্বশুরবাড়ীতে খুব ধুমধাম। সেকালে রসিকতার ক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রী বাছ-বিচার বড় একটা ছিল না।
শ্বশুর-জামাই, শাশুড়ী-পুত্রবধূতেই মোটা রসিকতার আদান প্রদান অবাধেই চলতো। বাদলার দিনে হঠাৎ গোপালকে দেখে গোপালের শ্বশুর খুব খুশি হল। তাই সে একটা রসিকতার প্রলোভন সংবরণ করতে পারল না।
সকলের সামনেই জিজ্ঞাসা করলে, ‘আজকের মতন বাদলায় কি-ভাল লাগে, বলো দেখি কে বলতে পারো?
যে বলবে, ‘তাঁকে ৫০.০০ টাকা পুরস্কার দেবো।’
গোপালের –শ্বশুরের অবস্থা বেশ ভালই।
গোপাল মুখফোঁড় লোক বলে উঠল ‘আজকের মত বাদলায় শ্বশুরবাড়ীতে গিয়ে বৌয়ের সঙ্গে হাসি আর গল্প করতেই ভালো লাগে। এর চেয়ে আর কি ভাল লাগতে পারে।’
ঠিক এই কথাটিই শোনবার প্রত্যাশা করছিল শ্বশুর। কিন্তু সে অমনি বলে উঠল, ‘কথাটি ঠিক, তাঁর চাইতেও ভালো লাগে বেয়াই-বাড়ি গিয়ে বেয়ানের সঙ্গে গল্প করতে।
বল-বাবাজী, তোমার চেয়েও এটা আরও বেশ ভাল নয় কি?’
গোপাল অমনি দাঁড়িয়ে চাদর কাঁধে তুললে, বললে, ‘তাই না কি? তা জানলে তো আমি না এসে বাবাকে পাঠিয়ে দিতাম। তা এখনও রাত বেশি হয়নি, আমি গিয়ে বাবাকে এখনই পাঠিয়ে দিচ্ছি। তিনি এসে বেয়ানের সঙ্গে গল্প-গুজব আমোদ-আহ্লাদ করুণ। আমি যত তাড়াতাড়ি পারব ছুটতে ছুটতে বাড়ি যাব।’
শ্বশুরের মুখ ভোঁতা। দেঁতো হাসি বের করে বলে, ‘তোমার এখন বৃষ্টির রাতে যেতে হবে না বাবা। ভিতরে গিয়ে বিশ্রাম কর।’
গোপাল মুচকি মুচকি হাসতে থাকে বৌ-এর দিকে তাকিয়ে মনের মত কথার জন্য মন বেশ খুশী।
আরো গল্প পড়তে এই দুইটি হ্যাশ ট্যাগ ব্যবহার করুণ → #গল্প #গোপাল
The post বউ বনাম বেয়ান | গোপাল ভাঁড়ের হাসির গল্প appeared first on Amar Bangla Post.