মুসলমানদের সবচেয়ে আনন্দের দিন হলো ঈদের দিন। বছরে দুই দিন #ঈদ হয়। এক মাস রোযার শেষে আসে ঈদুল ফিতর। যারা আল্লাহর হুকুমে এম মাস রোযা রাখে এদিনটি তাঁদের জন্য সবচেয়ে আনন্দের। আর হচ্ছে ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ। হযরত ইবরাহীম (আঃ) কে আল্লাহ বললেন, ‘তোমার সবচেয়ে প্রিয় জিনিস কোরবানী করো।’ ইবরাহীম (আঃ) ভেবে দেখলেন, পুত্রের চেয়ে প্রিয় আর কিছু নেই তাঁর কাছে। তিনি পুত্রকে শোনালেন আল্লাহর হুকুম। পুত্র ইসমাঈল (আঃ) পিতাকে তাগাদা দিয়ে বললেন, ‘তবে আর দেরি করছেন কেনো? জলদি আমাকে কোরবানি করার ব্যবস্থা করুণ।’ আল্লাহর হুকুম মানার ব্যাপারে পিতা-পুত্রের এই যে আকুলতা সেই কথা স্মরণ করে পালন করা হয় ঈদুল আযহা বা কোরবানীর ঈদ। যিনি যত বেশি আল্লাহর হুকুম পালন করেন তাঁর কাছে এই ঈদ তত বেশি আনন্দময়।
তেমনি এক ঈদের দিন। মদিনার ঘরে ঘরে খুশির জোয়ার বইছে। মহানবী (সাঃ) নির্দেশ দিয়েছেন, সবাইকে ফিতরা দিতে হবে। ফিতরা মানে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ অন্যকে দান করা। এর ফলে অর্থ শুধুমাত্র ধনীদের হাতেই জমা রইলো না, গরীবরাও প্রচুর অর্থ পেল। তারাও সুযোগ পেল পছন্দমট কেনাকাটার। ফলে সবাই আনন্দিত। ঈদের নামায শেষে মহানবী (সাঃ) সবার সাথে কোলাকুলি করলেন। কোলাকুলি শেষে সবাই বাড়ির পথ ধরলো। মহানবীও চললেন বাড়ির পানে। হঠাৎ কারো কান্নার আওয়াজ ভেসে এলো তাঁর কানে। থমকে দাঁড়ালেন তিনি। যেখান থেকে কান্নার আওয়াজ আসছিল সেদিকে এগিয়ে গেলেন তিনি। দেখলেন মলিন পোশাকের এক কিশোর বসে বসে কাঁদছে। দয়াল নবীর দয়া হলো। ছেলেটির কাছে এগিয়ে গেলেন তিনি। মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করলেন। আদর পেয়ে ছেলেটির কান্না আরো বেড়ে গেল। তিনি ছেলেটির কাছে জানতে চাইলেন তাঁর কান্নার কারণ।
ছেলেটি বলল, ‘আজ ঈদের দিন। মানুষের মনে কত আনন্দ। সবাই নতুন জামা কাপড় পড়েছে। মা-বাবা আদর করছেন সন্তানদের। কিন্তু আমাকে আদর করার কেউ নেই। আমার একটু খোঁজ নেয়ারও কেউ নেই দুনিয়ায়। আমার বাপ নেই, মা নেই। আমি যে ইয়াতিম।
কিশোরের কথা শুনে নবীর চোখে পানি চলে এলো। আহা! এই ছেলেটির মট আরো না জানি কত মায়ের সন্তান ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত। যদি তাঁদের খবর পেতাম! যদি তাঁদের মুখেও ফোটাতে পারতাম হাসি!
তিনি কিশোরকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরলেন। মা আয়েশার (রাঃ) হাতে ছেলেটিকে তুলে দিয়ে বললেন, ‘এ এক শহীদের সন্তান। ওর মা-বাপ কেউ নেই। আজ থেকে তুমিই ওর মা।’
মা আয়েশা (রাঃ) ছিলেন নবীর সহধর্মিনি। তিনি ছেলেটিকে বুকে টেনে নিলেন। নিজ হাতে গোসল করালেন। নতুন জামা এনে পরতে দিলেন। ভালবাসা পেয়ে কিশোরের মনটা ভালো হয়ে গেল। তাঁর মুখে ফুটে উঠলো মধুর হাসি। সে ভুলে গেল তাঁর দুঃখের কথা। ভুলে গেল সে এক অনাথ শিশু।
এ দুনিয়ায় এখন তাকেও ভালবাসার মত মানুষ আছে। আদর করার লোক আছে—এ কথা মনে হতেই তাঁর মুখে ছড়িয়ে পড়লো হাসি। সে আনন্দে বলে উঠলো—ঈদ মোবারক।
The post ইয়াতিমের হাসি। (শিশুদের মজার ইসলামিক গল্প) appeared first on Amar Bangla Post.