মায়ের পেটের ভেতর যখন শিশুর বিকাশ ও বৃদ্ধি হতে থাকে, তখন দম্পতির এবং তাঁর পরিবার-পরিজনদের মধ্যে একটা সহজাত কৌতুহল বাড়তে থাকে যে—সন্তান পুত্র, না কন্যা?
চিকিৎসককে বহু ক্ষেত্রে এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। দম্পতির বহু ক্ষেত্রে এমনও বলেন যে, ডাক্তার সাহেব, আমি শুধু জানতে চাই যে, পুত্র না কন্যা শিশু পেটে আছে? যদিও আমার কাছে দুই-ই সমান।
তবে কন্যা সন্তান সৃষ্টি হলে তাঁর ভ্রূণ অবস্থাতেই নষ্ট করে দেওয়ার ঘটনাও অনেক ঘটে। ভ্রূণ সৃষ্টির শুরুতে ১৬০ টি পুরুষ ভ্রূণ পিছু ১০০ টি স্ত্রী-ভ্রূণের সৃষ্টি হয়, যদিও জন্মের সময় প্রতি ১০৬ জন পুত্রসন্তান পিছু ১০০ জন কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এর কারণ হল, জীবনের যে-কোন বয়সে পুরুষের মৃত্যুর হার নারী অপেক্ষা বেশি। ভারতবর্ষে একটি জনসংখ্যা সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, প্রতি ১০০০ পুরুষ পিছু ৯৩৫ জন মহিলা।
ইচ্ছাকৃতভাবে কন্যাভ্রূণ নষ্ট করলে সমাজে পুরুষ ও স্ত্রী জনসংখ্যায় ভারসাম্য নষ্ট হতে বাধ্য। এবিষয়ে পর্যালোচনা করে, সুস্থ সমাজের স্বার্থে ভারত সরকার ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ বাতিল করেছে। তাই ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ধারণ অবৈধ।
অন্যদিকে বারে বারে কন্যা-সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য বহু পরিবারে স্ত্রীকে স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ী ও পরিবারের জন্য অন্য লোকেদের বহুবিধ লাঞ্ছনা-গঞ্জনা ও ভর্ৎসনা সহ্য করতে হয়। কিন্তু এ-ব্যাপারে পরিষ্কার ধারণা থাকা উচিৎ যে, সন্তানের লিঙ্গ পুরুষ বা স্ত্রী যা-ই হোক না, তা নির্ভর করে পুরুষেরই ওপর এবং তা নির্ধারিত হয়ে যায় শুক্রাণু দিয়ে ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে।
পুরুষের শুক্রাণুতে ২২ টি অটোজোম এবং দু’ধরণের সেক্স-ক্রোমোজোম থাকে। একধরনের হল ‘X’ এবং অন্যটি ‘Y’ । আর ডিম্বাণুতে ২২ টি অটোজোম এবং একই ধরণের দুটি সেক্স-ক্রোমোজোম থাকে। এই সেক্স-ক্রোমোজম হল ‘X’ । পুরুষের ২২+Y ক্রোমোজোম সম্পন্ন শুক্রাণু যখন ডিম্বাণুকে (২২+X ক্রোমোজোম) নিষিক্ত করে, তখন ৪৪+XY ভ্রূণের সৃষ্টি হয়, যা হল পুরুষ। আবার ২২+X ক্রোমোজোম সম্পন্ন শুক্রাণু যখন ডিম্বাণু (২২+X)-কে নিষিক্ত করে, তখন (৪৪+XX) ভ্রূণের সৃষ্টি হয়, যা হল নারী। সুতরাং বারে বারে যদি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়, তা স্ত্রী জন্য নয়—স্বামীর জন্যই হয়।
শিশুর লিঙ্গের ব্যাপারে কতকগুলি লক্ষণীয় বিষয়
- প্রথম সন্তান সাধারণত পুরুষ হয়।
- বেশি বয়সে সন্তান হলে তা সাধারণত কন্যাসন্তান হয়।
- ঘন ঘন যৌন-সহবাস হলে পুত্রসন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা থাকে।
- যৌন সহবাসের পূর্বে Sodi bicarb douche দিলে পুত্র সন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা থাকে, আর Vinegar acid vaginal douche দিলে কন্যাসন্তান জন্মানোর সম্ভাবনা থাকে।
শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ করার জন্য পরীক্ষা
- গর্ভাবস্থার চার মাস পর—
- অ্যামনিওসিনটেসিস (অ্যামনিওটিক ফ্লুইড পরীক্ষা) করে।
- আলট্রাসোনোগ্রাফি করে।

লেখকঃ ডাঃ অবিনাশ চন্দ্র রায়।
লেখকেরঃ গর্ভবতী মা ও সন্তান বই থেকে।
আপনি পড়তে এমন কিছু পোস্টের তালিকা নিচে দিলামঃ-
০১. প্রশ্নঃ কখন সহবাস করলে মেয়ে হয় আর কখন সহবাস করলে ছেলে হয়?
০৩. হাদীসের আলোকে আদর্শ স্বামী
০৪. স্বামী স্ত্রীর যৌন অঙ্গ লেহন কি জায়েয?
০৫. প্রশ্নঃ কখন সহবাস করলে বাচ্চা হয়
এই লেখাটি পড়ে আপনার কাছে ভালো লাগলে ফেসবুক সহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে জনসচেতনায় তৈরিতে আপনিও ভূমিকা রাখুন। শেয়ার বাটন নিচে দেওয়া আছে। ↓
The post ভ্রূণের লিঙ্গ (ছেলে না মেয়ে) নির্ধারণ appeared first on Amar Bangla Post.