Quantcast
Channel: Amar Bangla Post
Viewing all articles
Browse latest Browse all 2081

এক সাথে জান্নাতে যাবো (স্বামী স্ত্রী মিষ্টি ভালোবাসার গল্প)

$
0
0

“জুম্মার মধ্য দুপুর-
ফাল্গুন এখনো শুরুই হয়নি। মাথার উপরে সূর্য্যের তীব্রতা জানান দিচ্ছে চৈত্রমাস। চৈত্রের চৈতন্যের মতো ক্ষীপ্রতায় খাঁ খাঁ করছে পরিবেশ। জানালার পাশে এক নারীমূর্তি। মূর্তিটা দেখে খানিকক্ষণ গাঁ হিম হয়ে গেলো। আষাঢে় বর্ষার পাহাড়ি ঢলের মতো ধেয়ে আসা চোঁখের অশ্রুরেখা সাক্ষী দিচ্ছে কিছু একটা হয়েছে। কান্না কখন শুরু করেছে তা জানিনা। তবে চোখের নিচের চামড়ায় কালো হয়ে যাওয়া স্থানটা বলেছে অনেকক্ষণ। মূর্তিটার মন প্রচুর শক্ত। অত সহজে কাঁদেনা। ছিঁচকাঁদুনে স্বভাব কখনো ছিলোনা। কোনোদিন এভাবে কাঁদতে দেখিনি।

কেঁদে কেঁদে সোনা বউটার কচি মুখটা ফ্যাকাশে হয় গেছে।

শিরীন! এ-ই শিরীন!! শিরীন কী হইছে? এ-ইইই শিরীন!

“উত্তর নাই। আসলে কেউ কাঁদলে আমি কখনো বাধা দিইনা। বরং প্রানভরে কাঁদতে দিই। আমার যখন কাঁদতে ইচ্ছা হয় নীরবে যেয়ে কেঁদে আসি।জেমসের একটা গান আছে “কান্নায় লাভ নাই” “কাঁন্নায় হবেনা কোনদিন পদ্মা- মেঘনা” দিনের আলোয় শুকিয়ে যাবে সে হবেনাতো এক নদী যমুনা।

গান শুধু গানই। এতে পদ্মা-মেঘনা না হোক। অথবা না হোক যমুনা। শুকিয়ে যাক- তবুও লাভ আছে। আকাশে কালো মেঘ জমলে গণঅন্ধকার নেমে আসে। মেঘমালা বৃষ্টি হয়ে পৃথীবিতে ঝড়লে আসমানি নীলাভ্র হয়ে নতুন বউয়ের সাজে। সাজে। আশপাশের সার্বিক পরিবেশটাও কেমন যেনো পবিত্র পবিত্র হয়ে উঠে। ঠিক যেনো ওই-ই দূরের আসমানীর বিয়ের বরযাত্রী। ঘোর অমাবস্যার পর এক পশলা চাঁদনী।

ঠিক এমনিভাবে মানুষের কাঁন্নার সাথে মেঘ-বৃষ্টির তফাৎ খুঁজে পাইনা। বহুকষ্টে যখন মানুষের মনে প্রচুর কষ্টের কালো মেঘ জমে। কাঁন্নাবৃষ্টি করে মানুষ। কাঁন্না বৃষ্টিতে মনে কষ্ট ধুয়ে হালকা হয়। মনের পরিবেশে পবিত্র একটা ভাব আসে। তাই মাঝে মাঝে নীরবে কেঁদে আসি। বাসায় কাঁদলে শিরীনের বাধায় নিজে ইচ্ছামত কাঁদতেও পারিনা। কাছে এগিয়ে গায়ে মৃদু ধাক্কা দিলাম। না কোন রিএকশন নেই। একদম নিস্তব্ধ ভাবলেশহীন। জানালার ফাক দিয়ে আসা সূর্যের আলোতে চিক চিক করতেছিল মায়াবীনির অর্ধাঙ্গীনির চোঁখের অশ্রুকণাগুলো। আবার ধাক্কা দিয়ে বললাম- মোবাইল ফালাই থুইয়া গেছিলাম। মোবাইল কই?

-নিরুত্তর!

-শিরীন এ্যাই শিরীন- এইই-ই মোবাইল কই?

-চুপচাপ! নিশ্চুপ!!

-দ্যাখো শিরীন মেজাজ কিন্তু খিঁচতেছে। কথা বলবানা?

-চুপ!!

-শিরীন- শিরীইইই-ইইইন-

“কাজ হয়নি। শুধু অধিক শোকে মানুষ পাথর হয়না। অধিক অভিমানেও পাথর হয়। শিরীনের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। কার সাথে অভিমান?। ওদের বাড়ি থেকে কিছু বলেছে?। আমিও তেমন কিছুই বলিনাই। তো? তাহলে?।

“আল্লাহু আকবর। আল্লাহু আকবার।

“মুয়াজ্জিনের আজানের সুর শুনে শিরীনকে আর ঘাঁটালাম না। প্রানভরে একা একা কাঁদতে দিয়ে জুম্মার প্রথম প্রস্তুতি হিসেবে গোসলে গেলাম। নামাজটাও ঠিক ভাবে হয়নি। মনের ভেতর একটা খুত খুতভাব ছিলো-ই। হঠাৎ এত অভিমান কার সাথে। আমি ছাড়া এভাবে ওর অভিমান করার মানুষ দেখিনা। হতে পারে অন্যকিছু। মন খারাপ করার কতশত কারণইতো এ পৃথিবীতে জন্ম নিচ্ছে। তার কোনো হিসাব নাই। কে কার হিসাব রাখে?।

“ইয়া আল্লাহ। সে এমন না। আমার বিশ্বাস হয়না। ইয়া মাবুদ উনি পরকিয়া করতে পারেনা। আমার সন্দেহ দূর করে দাও মাবুদ। ইয়া মাবুদ উনি দোযখে যাক সেটা চাই না। উনাকে নিয়ে জান্নাতে যেতে চাই জান্নাতে।

“জুম্মা শেষে নিঃশব্দে ঘরে ঢুকে বসলাম। হাউমাউ করে কাঁন্নার শব্দটা পাশের রুম থেকেই আসছে। মোনাজাত অবস্থায় অর্ধাঙ্গীনিরই কাঁন্না। কাঁন্নায় চোঁখ ফুলে গেছে। প্রচণ্ড মায়ায় বুকে জড়িয়ে জিজ্ঞেস করলাম- কীসের সন্দেহ? কী হইছে বলবানা? নিজেকে ছাড়িয়ে ড্রয়ার থেকে মোবাইলটা সামনে এনে আমার হাতে দিলো-

-আই লাভ জানু- প্লীজ এক্ষুনি কল দাও। এক্ষুনি!!

“মোবাইল হাতে নিয়ে মেসেজটা দেখে চক্ষু কপালে উঠে গেছে। ওরে বাবা এইটা কী?। মেয়েটা তখনো অনলাইনে এক্টিভ। স্পীকার অন করে মেসেঞ্জারে দ্রুত কল দিই-

ওপাশ থেকে- হ্যালো কে?

-কে মানে চিনোনাই? তোমার জানু 😕

-কী!! মেসেঞ্জারে কল দেওয়ার সাহস পাইলেন কই?

-আমি তোমার জানু! সাহস পাবে কী অন্য ছেলে? 😕

-অপরিচিত মেয়ের সাথে ভালো আচরণ করতেও শিখেননি?

-খারাপের কী করলাম? তুমিই জানু ডাকলা! কল দিতে বললা! 😕

-বেশী বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু!!

-বাড়াবাড়ির শুরুতো আপনি-ই করলেন 😕

-মানে?

-এক সুন্দরী রমণীর হালাল স্বামীর ইনবক্সে বে-হালালভাবে জানু ডেকে। আবার কল দেওয়ার কথাও বলেছেন।

-কী? কখন আপনাকে জানু বললাম? কল দিতে বললাম?

-আপনার ইনবক্সের লিষ্ট চেক করুন।

-সর‍্যি ভাইয়্যা! ইয়ে মানে!! আসলে ইয়েকে মেসেজ দিতে। মেসেজ দিতে যেয়ে ইয়ে মানে!! এগেইন সর‍্যি!!

এতক্ষণ ওপাশ থেকে ওই মেয়েটার এমন কাকুতি মিনতি সর‍্যি সর‍্যি শুনে শিরীন মুচকি হাসতে শুরু করেছে। ওই যে কালোমেঘ কেটে গেলে নীলাভ্র আকাশে সূর্য্যটা যেমন দীপ্তিময় হাসি হাসে। পরিবেশে পবিত্র পবিত্র একটা ভাব আসে। শিরীনের অবস্থা এখন তেমনই। পবিত্র পবিত্র একটা ভাব। অর্ধাঙ্গীনির ভাবটা এমনই হওয়ার কথা- ওই যে আল্লাহ বলে দিয়েছেন-

“তোমরা(স্ত্রী)তাদের পোশাক। তারা(স্বামী)তোমাদের পোশাক। (আল-কুরআন)

“কেউ কি চায় তার পোশাকে ময়লা লাগুক?। নষ্ট হোক?। অপবিত্র হোক। অন্তত ধার্মিকরা তা চায়না। এমনও হতে পারতো শিরীন আমাকে আরো ঘোরতর সন্দেহ করতে থাকতো। ছোট্ট মেসেজের সন্দেহটা দিন দিন শিরীনের মনে বড় হতে হতে শয়তান আমাদের মনে বিভিন্ন আসওয়াসা দিতো। এক সময় অপ্রকাশিত এই সন্দেহের আঘাতে শয়তান ভেঙে দিতো আমাদের সুখের সংসার। এগুলোইতো এখন অহরহ ঘটতেছে। সন্দেহের বলি হচ্ছে কত শত সুখের সংসার।- কী ভাবেন ভাত খাইবেন না?

-হুম।-শিরীন খাওয়ার শেষে তোমারে নিয়া জান্নাতে যাবো- 😊 ❤

আমার বাংলা পোস্ট.কম থেকে আরও কিছু মিষ্টি প্রেমের গল্প পড়ুন

০১ স্বামী স্ত্রীর বাসর রাতের মিষ্টি কাহিনী

০২ পিচ্ছি বউ-স্বামী স্ত্রী প্রেমের গল্প

এই মজার গল্পটি আপনার বন্ধুদেরকে পড়াতে ফেসবুক সহ অন্যান্য সামাজিক মিডিয়ায় ভাগ করুণ।

The post এক সাথে জান্নাতে যাবো (স্বামী স্ত্রী মিষ্টি ভালোবাসার গল্প) appeared first on Amar Bangla Post.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 2081

Trending Articles