আমাদের ইসলামী চিন্তাবিদগণ ফ্রি সেক্স কে তুলোধুনো করে দিতে পারে , কিন্তু এসব বয়ান সেকুল্যাররা গায়ে মাখেনা,
তারা ফ্রিডম অফ সেক্সে বিশ্বাসী , ফ্রি সেক্স আর ফ্রিডম সেক্সে বিশাল পার্থক্য বিদ্যমান । ফ্রি সেক্সের বয়ান দিয়া নিজেদের সেকুল্যারদের আক্রমণ থেকে ডিফেন্ড করা যায়না , ফ্রিডম অফ সেক্সকে অফেন্স করা শিখতে হবে ।
পশ্চিমা বিশ্বে বিবাহ ভাঙ্গা ,সংসার ভেঙ্গে পড়ার একটা বিপর্যয় তৈরি হয়েছিল বছর কয়েক আগে । এখন তারা সে বিপর্যয় কাটানোর চেষ্টা করছে , বিয়া ছাড়াও গার্লফ্রেন্ড নিয়া সংসার করা যায় ,বাচ্চা ফুটানো যায় ,লাইফ লিড করা যায় তা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো বা মেসিরা দেখিয়ে দিচ্ছেন ।ইন্টারনেট জগৎ বা পুরো বিশ্বে তাদের ক্রেজ আছে বহুত । বিবাহ নিতান্তই সামাজিক প্রথা বা ধর্মীয় আদেশ এ হিসেবে তার যথার্থতাকে টিকিয়ে রাখা যাবেনা ।কিংবা ফ্রি সেক্সেকে অফেন্স করার মাধ্যমেও নয় ……………………।
আমরা এখনো খোড়া যুক্তি দিচ্ছি ,এসব বিবাহ বহির্ভূত সেক্সে ভ্রুণ নষ্ট হয় ,বাচ্চা ড্রেনে পড়ে থাকে ,এইডস হবে , ব্লা …ব্লা ………ব্লা অথচ মডার্ণ কান্ট্রি গুলাতে এসব ঝুকি একেবারেই কম ।
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান উন্নত দেশগুলোতে এইডস ডিফেন্ড করার বহু কায়দা ,কানুন শিখায়া দিসে । আমেরিকার দেখাদেখি নাইজেরিয়া বা বাংলাদেশে লিভ টু গেদার শুরু করলে এইডস বাড়বে স্বাভাবিক , কারণ আমেরিকান মাইয়াদের ব্যাগেজে লিপস্টিক ,আয়না আর মেকাপ বক্সের সাথে কনডমের প্যাকেট থাকে আর বাংলাদেশের বিবাহিত পুরুষরাও কনডম কিনতে ছোট ভাইরে লুকায়া দোকানে পাঠায় ……………।
এখন এসব সমস্যাকে সেক্সিজমকে ডিফেন্ড করার কয হিসেবে ব্যাবহার করা পুরাই লেইম কাজ ।
তাই যারা এসব তাত্বিক বিষয়গুলা নিয়া ভাবতেছেন তাদের আরো ভাবতে হবে ।গ্লার্লফেন্ড থাকা বা মাল্টিপল সেক্সুয়াল রিলেশন উন্নত বিশ্বে একটা ট্রেন্ড । অতি স্বাভাবিক বিষয় । এবং এতে যেসব স্বাস্থ্যঝুকি , সোসাল ডিজ অর্ডার তৈরি হচ্ছে তা তারা শক্ত হাতে মোকাবেলা করছে ।
আমাদের দেশে সেক্সের বৈধতা মানে বিয়া করা । আর বিয়া করার অর্থ হলো একটা মেয়েকে লাইফ ,স্টাডি ,ক্যারিয়ার ,প্যাশন ছেড়ে শাশুড়ি ,স্বামীর খেদমতে একটা পর্দাময় রুমে আটকে থাকা ।
বিধর্মী তো বটেই ,একটা মুসলিম পরিবারের মেয়েও বিয়েকে একটা আতঙ্ক হিসেবে দেখে । একটা প্যারা হিসেবে দেখে ।তাই তারা ফ্রিডম সেক্সকে বেছে নিচ্ছে । তাদের চাহিদা মিটছে ,বাচ্চা নেয়া লাগতেসে না ,শাশুড়ির পা টিপা লাগতেছেনা ,স্বামীর দেয়া ভারী কাপড়ের বোরকা পড়া লাগতেসেনা । সো কেডা এসব করতে যায় ,বিয়া ,সাদি ,কাবিন ,কলমা ,আগেরা বাগেরা………………………।।
দে ইজিলি একসেপ্ট দ্যাট ট্রেন্ড ।এবং বাংলাদেশে ধানমন্ডি ,গুলশান ,বারিধারার মেয়েরাও স্বাস্থ্য সচেতন । তারাও ব্যাগে কনডম রেখে হাটাচলা করে । তাদের এইডস এর ডর দেখায়া আল্টিমেটলি কোন লাভই নাই ।
ভাবছেন মারেফাতি বয়ান করে ,আল্লাহ ভয় ঢুকিয়ে মেয়েগুলাকে বেঁধে রাখবেন ,ছেলেগুলাকে বেঁধে রাখবেন , সরি টু সে ,এটা অতটা কাজে দেবেনা । নিম্নমধ্যবিত্ত আয়ের ,মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির হতাশ জীবন যাপনকারী একদল ছেলে মেয়েদের আপনি বোঝাতে সক্ষম হবেন । কিন্তু যারা ট্রেন্ড তৈরি করে ,বাজার নিয়ন্ত্রণ করে , ফ্যাশন জগত কে লিড দেয় ,তাদের বুঝিয়ে সুজিয়ে দু একটা হ্যাপী থেকে আমাতুল্লাহ বানাতে পারবেন , কিন্তু বসুন্ধরা ,যমুনা বা ঢাবির ক্যাম্পাসে হাটতে পারবেন না ।
অনেকেই হিজাবের প্রচলনে খুব খুশি ।আমিও খুশি ।হিজাব টা ফ্যাশন হোক ,আর ইসলামি ধারা হোক এটা গায়ে ওঠাই খুশির ব্যাপার ।তবে আজকাল পোশাকটা মেজর ফ্যাক্ট না ।
শর্ট হাতা ওয়য়ালী ,গেঞ্জি পড়া যেই মেয়েটাকে দেখে ,ঘেন্নায় নাক সিটকাচ্ছেন ,বেহায়া বলছেন , সেই মেয়েটার হয়ত সেক্স নিয়া কোন ক্রেজ নাই ,সেই পর্নোগ্রাফি এভয়েড করে , মন খুব ফ্রেশ ,সবারে সাথে হাসিখুশি ,ব্লাড ডোটেন করে ,বাচ্চাদের স্কুলের জন্য টাকা তোলে , আপনি তার শর্ট পোশাক দেখে ভাবছেন এটা বেহায়া ,হতে পারে সে মোটেও সেরকম না ।
হিজাবীদের দেখে আপনি খুব আশ্বত্ব ,কিন্তু তাকে ডাকলে সে চলে আসে ।সবুজ ক্যাম্পাসে বসে হিজাব পড়েই বন্ধুদের গা ঘেষে আড্ডা দেয় । নিয়মিত বিছানায় যাতায়াত আছে ।
হোয়াট উড ইউ সে নাউ!!! পোশাক দেখে মেন্টালিটি জাজমেন্ট !! ইটস কোয়াইট ইম্পসিবল টু জাজ ।চিন্তার খেলা ,আদর্শের খেলা ,ট্রেন্ড সামলানোর খেলা ।
ক্লোজাপ বর্জন!! সারা বাংলাদেশে ক্লোজাপের টুথপেস্ট বন্ধ হলে যে টাকা তাদের লস হবে ,ক্লোজাপের ভালবাসার নাটক ইউ টিউবে আপ্লোডাইয়া তারা বেশী কামায়া নেবে? আপনি দেখবেন না? মুড়ি খান , দেশের ৯০% তরুণ দেখবে , তো কি করবেন?

সাইয়্যেদ হাসান আলী নদভী রহ এর লেখা বই “মুসলিম বিশ্বে ইসলাম ও পাশ্চত্য সভ্যতার দন্দ্বে ,তিনি দেখিয়েছেন , মুসলিম বিশ্ব ট্রেডিশনাল থেকেও পশ্চিমা সংস্কৃতির চিন্তার জগৎ থেকে নিজেদের রেহাই করতে পারেনাই ।বহু উন্নয়নের সুচকে তারা আধুনিক দেশগুলো থেকে পিছিয়ে পড়েছে , মডারেটরে উন্নত হয়েছে বটে ,কিন্তু সংস্কৃতিক আগ্রাসনে তারা মুখ থুবড়ে পড়েছে , তিনি উত্তরণের পথ হিসেবে বলেছেন ছাকুনি ।ছাকুনি দিয়ে ভালটাকে গ্রহণ ,আর খারাপ টাকে ফেলে দেয়া । কিন্তু সেই ভালমন্দ বাছাইয়ের ছাকুনি তৈরির যোগ্যতায় আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি ।
তাই একটা নতু ট্রেন্ড তৈরি সময়ের দাবী ।ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির আর্টিস্ট কিংবা মোছওয়ালা বুদ্ধিজীবিদের হুংকার দিয়ে নয় , বরং বুদ্ধি দিয়ে পরাস্থ করতে হবে । এটাতো সবাই জানি বুদ্ধি দিয়ে পরাস্থ করবো ,কিন্তু যে জাতি নামাজের মসালায় হাত কোথায় বাঁধবে সেটা নিয়া দেশটাকে তামা কইরা ফালাইছে ,তারা আবার বুদ্ধিবৃত্তিক ট্রেন্ড বানাবে? হাউ ক্রেজি!!!!!
আসলেও হাসি পায় ,ধর্মে হারাম ,ধর্মে হারাম ঃ এসব জাতি এখন খায়না ।এখন বলুন কেন হারাম ,হারাম বলার আগে বলুন কি সমস্যা আছে……,করলে কি সমস্যা ।তারপর হারাম বলেন ,প্রজন্ম ইজিলি একসেপ্ট করবে ।
বলতে পারেন ,ইসলাম কিন্তু যুকি দিয়ে চলে? আমি বলবো ,ইসলাম যুক্তি দিয়ে চলে ,আবার যুক্তির উর্ধ্বেও চলে।
ইসলামে যেসব বিষয় হাক্কুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর হকের সাথে সম্পর্কযুক্ত সেসব বিষয়ে যুক্তি খোজা যাবেনা , নামায হাক্কুল্লাহ , এখানে যুক্তি খোজা যাবেনা , কেন ৫ ওয়াক্ত , মাগরিবে চার রাকাত পড়লে সমস্যা কি , রোজা হাক্কুল্লাহ ,হজ্ব হাক্কুল্লাহ কেন সুবেহ সাদিক থেকে মাগরিব প্রশ্ন করা যাবেনা? কেন সাত বার তাওয়াফ প্রশ্ন করা যাবেনা ……………।
যাকাত হাক্কুল্লাহ ও হাক্কুল ইবাদ দুটার সাথেই সম্পর্ক যুক্ত । তাই ২.৫% আর যাকাতের শ্রেণী নিয়া তর্ক করা যাবেনা । কিন্তু যাকাত বন্টন সিস্টেম নিয়ে তর্ক হবে ,নতুন ফতোয়া হবে । কোন শ্রেণীকে যাকাতের টাকার বেশী হক্বদার করা হবে সে নিয়ে তর্ক হবে , ঠিক তেমনিভাবে , জেনা থেকে বিরত থাকা ,রাষ্ট্রব্যাবস্থার বিভিন্ন আইন ,বিভিন্ন নতুন অপরাধ কর্মের শাস্তিতে মৌলিকভাবে আল্লাহর হক বা আদেশ রয়েছে , কিন্তু এগুলোর হাক্বীকি উদ্দেশ্য হলো জনকল্যাণ , তাই সুবাহানাল্লাহ বলায় কয় নেকী আমরা জানি ,কিন্তু মরা ব্যাক্তির কাফনের কপড় কিন্যা দিলে গজ প্রতি কত নেকী তার কিন্তু হাদীস নাই , ইসলামের সাথে যুক্ত সকল সামাজিক প্রথা ,সকল হাক্কুল এবাদ সম্পর্কিত মাসালাগুলার যৌক্তিক ব্যাখ্যা আছে , এই যৌক্তিক ব্যাখ্যাগুলো যুগের চাহিদা অনুযায়ী মূলনীতি ঠিকরেখে আপগ্রেড হবে ,তত্ব আসবে ।
তাই আসুন ,আমাদের যুক্তি প্রয়োগের জায়গাগুলা বুঝি ,আদর্শ ইম্লিমেন্টের জায়গাগুলো বুঝি ।
আবার এটা ভুলে গেলে চলবেনা ,হাক্কুল ইবাদটাও ,হাক্কুল্লাহকে সাপোর্ট দেবার জন্যই ,হাক্কুল্লাহর রসদ জোগার তৈরির জন্যই ।
তাই যুক্তি ,জ্ঞান চর্চা আর ট্রেন্ড তৈরিতে শরয়ী মূলনীতি কে সামনে রাখা চাই । এখানে অনেক কঠিন কথা থাকতে পারে ।যারা বুঝেন নাই ,অযথা গ্যাজাইবেন না, দয়া করে প্রশ্ন করবেন । বা আমার ভুল হলে খোলা মনে কনভার্সেসনে আসবেন । সালাম ,সালাম ,শান্তি ,শান্তি ।
লেখক : মুহাম্মদ জুবায়ের আহসান
The post ফ্রি সেক্স ধর্মে হারাম ,ধর্মে হারাম : এখন জাতি এসব খায়না! appeared first on Amar Bangla Post.