Quantcast
Channel: Amar Bangla Post
Viewing all articles
Browse latest Browse all 2081

বন্ধ্যাত্ব। দায়ী কে?

$
0
0

বন্ধ্যাত্বস্মৃতিচারণঃ অন্তরা সেন। বয়স ৩৫। পেশায় নার্স। বিয়ে করার তিন মাসের মধ্যে খোসবাগানে আমার চেম্বারে। গর্ভসঞ্চার হচ্ছে না। ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করার পর কিছু ল্যাবরেটরি পরীক্ষা এবং স্বামীর বীর্য পরীক্ষার কথা লিখে দিই। আর দেখা নেই, বেশি বয়সে বিয়ে, তাড়াতাড়ি সন্তান চাই। আমার উপর আস্থা না রেখে কলকাতা, চেন্নাই, ভেলোর ছোটাছুটি করলেন। প্রায় তিনি বছর পর আবার আমার কাছে। তিনি এখন জানতে পেরেছেন বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় আমার কাছে অনেকেই সুফল পেয়েছেন। মিসেস সেনের বয়স এখন ৩৮। এক লাখ টাকার মত খরচ হয়ে গিয়েছে। কলকাতার বিশেষজ্ঞ টেস্টটিউব বেবির কথা বলেছেন। প্রায় ২-৩ লাখ টাকা খরচ হবে কিন্তু নিশ্চয়তা নেই।

এরকম অনেকে মহিলাই বিভ্রান্ত হয়ে অলিগলিতে গজিয়ে ওঠা ‘ইনফার্টিলিটি ক্লিনিক’-এ গিয়ে নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ, শ্রম এবং পারিবারিক শান্তি নষ্ট করে যখন ফিরে আসছেন তাদের অনেকেই হতাশাগ্রস্থ এবং গর্ভাসঞ্চার হওয়ার শেষ অবস্থায়।

দৃষ্টিপাতঃ মাতৃত্ব ও পিতৃত্ব বিবাহিত জীবনের পরম প্রাপ্তি। বিয়ের পর নারীর গর্ভে সন্তান না এলে দাম্পত্য জীবন এক প্রশ্নের সন্মুখীন হয়—এর জন্য দায়ী কে?

পরস্পর দোষারূপে জীর্ণ হয় স্বপ্নময় ভবিষ্যৎ। আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় এর জন্য সাধারণত স্ত্রীদেরই দায়ী করা হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শ্বশ্রূমাতারা তো বৌমার ঘাড়ে সব দোষ চাপিয়ে নিজেদের পুত্রের আবার বিয়ে দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন। কিন্তু বাস্তব সত্য হল সন্তানহীন বা বন্ধ্যাত্বের জন্য পুরুষ এবং স্ত্রী উভয়ই সমান দায়ী। বর্তমান পরিসংখ্যান হল বন্ধ্যাত্বের জন্য শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ ক্ষেত্রে স্বামীরা দায়ী। স্ত্রী প্রায় শতকরা ৪০ ভাগ দায়ী। বাকি শতকরা ৩০ ভাগ ক্ষেত্রে উভয়েই যৌথভাবে দায়ী বা যার কারণ অজ্ঞাত।

তাই বন্ধ্যাত্বের সমস্যা সমাধানে স্বামী এবং স্ত্রী উভয়েরই একসঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক। অক্ষমতা যারই থাক গোপনিয়তা একান্ত বাঞ্ছনীয়। এতে দাম্পত্যজীবন বিষময় হবে না। পরবর্তী পদক্ষেপগুলি হবে সহজ এবং উপযুক্ত চিকিৎসায় প্রতিটি দম্পতিই সন্তানের মাতাপিতা হতে পারবেন।

এখন দেখা যায় বন্ধ্যাত্ব কখন বলা হয়, গর্ভসঞ্চার কীভাবে হয়, বন্ধ্যাত্বের কারণগুলি কী এবং এর প্রতিকারই বা কী?

বন্ধ্যাত্বের সংজ্ঞা কীঃ

পুরুষ ও নারীর যৌনমিলনের ফলে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু একত্রে মিলিত হয়ে ভ্রূণ তৈরি করে, যা পরবর্তীকালে মানব শরীরের রূপ পায়। সাধারণত বিয়ের এক বছরের মধ্যে স্বাভাবিক যৌনজীবনে ফলেও যদি কোনো স্ত্রী গর্ভবতী না হন তখন বন্ধ্যাত্ব অর্থাৎ প্রাইমারি ইনফার্টিলিটি (বন্ধ্যাত্ব) বলা হয়। সেকেন্ডারি ইনফার্টিলিটি (বন্ধাত্ব) বলা হয় যখন কোনো স্ত্রী গর্ভধারণের পর জীবিত, মৃত বা সন্তান পরিপূর্ণ সময়ের আগেই প্রসব করেছিলেন অথবা গর্ভসঞ্চারের পর গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট হয়ে গিয়েছিল বা নষ্ট করা হয়েছিল কিন্তু এর পর আর গর্ভসঞ্চার হচ্ছে না।

গর্ভসঞ্চারের মূলকথা…

গর্ভসঞ্চারের জন্য চাই….

০১. সুস্থ ও স্বাভাবিক শুক্রাণু যা কিনা মহিলাদের ফ্যালোপিয়ান টিউব অর্থাৎ ডিম্ববাহী নালীতে পৌঁছাতে সক্ষম।

০২. সুস্থ ও স্বাভাবিক ডিম্বাণু যা কিনা ফ্যালোপিয়ান টিউবে পৌঁছাতে এবং নিষিক্ত হতে সক্ষম।

০৩. নিষিক্ত ডিম্বাণুর নিষিক্ত হওয়ার যষ্ঠ দিনে জরায়ূর মধ্যে প্রতিস্থাপন এবং পরবর্তীকালে পরিপূর্ণতা লাভ করতে সক্ষমত।

এখন দেখা যাক গর্ভসঞ্চার কিভাবে হয়।

যৌন মিলনের ফলে যোনিপথে সার্ভিক্স অর্থাৎ জরায়ুর মুখের কাছে বীর্যপাত হলে সেখান থেকে শুক্রাণু সার্ভিক্স ও জরায়ুর ভেতর দিয়ে ফ্যালোপিয়ান টিউবে পৌঁছায়। সাধারণতঃ মাসিকের ১৪ দিনের দিনে মেয়েদের ওভুউলেশন অর্থাৎ ওভারি থেকে ডিম্বাণু নির্গত হয়। শুক্রাণুর যেমন নিজস্ব চলনশক্তি ও গতি আছে কিন্তু ডিম্বাণুর সেরকম কোণ গমনশক্তি নেই। নার্ভ ও হরমোনের প্রভাবে এই সময় আঙ্গুলের মতন দেখতে ফ্যালোপিয়ান টিউবের ফিমব্রিয়াগুলি নড়তে থাকে। ওভুউলেশন হলে ওভারি থেকে নির্গত ডিম্বাণু নড়তে থাকা ফিমব্রিয়ার   মধ্যে আটকে পড়ে। ফ্যালোপিয়ান টিউবের নালীর অভ্যন্তরে চুলের মত অসংখ্য সিলিয়া থাকে। এই সিলিয়াগুলি ফ্রিমব্রিয়ায় আঁটকে পড়া ডিম্বানুকে ফ্যালোপিয়ান টিউবের অ্যাম্পলা অশে পৌঁছে দেয় যেখানে শুক্রাণুর সঙ্গে ডিম্বানুর মিলন ঘটে অর্থাৎ ডিম্বাণু নিষিক্ত হয়, সৃষ্টি হয় ভ্রূণের। নিষিক্ত হওয়ার ষষ্ট দিনে এই ভ্রূণ জরায়ুর গহ্বরে প্রতিস্থাপিত হয় এবং ক্রমশঃ মানব শরীরের অবয়বে রূপান্তরিত হয়। উপরোক্ত শর্তগুলিতে কোনো অভাব থাকলে বা বাধাপ্রাপ্ত হলে বন্ধ্যাত্বের সৃষ্টি হয়।……

বাকী অংশ পরে লেখায় আলোচনা করা হবে।

The post বন্ধ্যাত্ব। দায়ী কে? appeared first on Amar Bangla Post.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 2081

Trending Articles