অনেক পরিবারে ঝগড়া-ফ্যাসাদ লেগে থাকে। স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া, স্ত্রীর ননদের, জা এর সাথে ঝগড়া এমনকি স্বীয় মা-বাবার সাথেও স্ত্রীর কারণে ছেলেদেরকে ঝগড়া করতে দেখা যায়। জেনে নিন এসব ঝগড়া ফ্যাসাদ কিভাবে এড়িয়ে চলবেন।
এক. স্বামীর উচিত স্ত্রীর কথার উপর নির্ভর না করা এবং স্ত্রীরও উচিত স্বামীর কাছে এমন কোন কথা না বলা, যা শুনে স্বামী উত্তেজিত হয়ে যেতে পারে।
দুই. যখন পরিবারের কার সম্পর্কে কোন অভিযোগ শুনবে, তখন মনে করে নিবে, অভিযোগকারী একটি সত্যের সাথে দশটি মিথ্যার সংযোগ ঘটিয়েছে।
যদি বিষয়টি স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করতে, তাহলে তার প্রতিবিধান করতে চাইলে একটি অন্যায় কাজের প্রতিবিধান করতে একটি অন্যায় দ্বারা। অথচ অপরের থেকে শোনা কথার উপর নির্ভর করে এখন তোমাকে একটি অন্যায়ের বিনিময়ে দশটি অন্যায় করতে হবে। তাহলে ব্যাপারটি এমন হলো যে, কেউ তোমার এক পয়সা ক্ষতি করলো, বিনিময়ে তুমি তার দশ পয়সা ক্ষতি করে বসলে। অতঃপর যখন তা আদালতে যাবে, তখন দেখা যাবে, এক পয়সার খতির বিনিময়ে তার দশ পয়সা ক্ষতি করার কারণে উল্টো তুমিই আদালতে অপরাধী সাব্যস্ত হয়েছ।
যেম কারো সম্পর্কে শুনলে যে, সে তোমার কোন একটি দোষচর্চা করেছে। তখন তুমিও তার একটি দোষচর্চা করে প্রতিশোধ নিয়ে নিলে। এটা তো বিনিময় হয়ে গেলো। এখানে যদি মেনেও নেয়া হয় যে, সম্পূর্ণ সমান সমান প্রতিশোধ হয়ে গেছে, তাহলে সেটা হবে পরিমাণের দিক থেকে সমান। কারণ, প্রতিপক্ষের একটি দোষচর্চার বিনিময়ে তুমিও একটি দোষচর্চা করলে। কিন্তু এ কথার কি নিশ্চয়তা আছে যে, তোমার এ প্রতিশোধ গ্রহণ গুণগত দিক থেকে অধিক হবে না, কিংবা ভবিষ্যতে আধিক্য লাভ করবে না? সাধারণত দেখা যায়, কারো সম্পর্কে অন্তরে একবার খারাপ ধারণা বদ্ধমূল হয়ে গেলে তার প্রতি প্রতিশোধমূলক আচরণ করেও মানুষ স্বস্তি পায় না। বরং পূর্বানুরূপ খারাপ ধারণা তার অন্তরে থেকেই যায়। উপরন্ত তা থেকে জন্ম নেয় বিদ্বেষ ও প্রতিহিংসা। যা গুণগত দিক থেকে দোষচর্চার তুলনায় অনেক বেশি নিকৃষ্ট। হিংসা সম্পর্কে হাদীসে বর্ণিত রয়েছে—“হিংসা নেক আমলসমূহকে এমন ভাবে নিঃশেষ করে ফেলে, যেমন আগুন কাঠকে জ্বালিয়্যে ফেলে”।
সুতরাং প্রতিপক্ষের দোষচর্চার বিনিময়ে তোমার অন্তরে যে হিংসা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি হলো, তা তো গুণগত দিক থেকে অনেকগুণ বেশি জঘন্য। কেননা তা তোমার যাবতীয় নেক আমলসমূহকে নিঃশেষ করে ফেলবে। পক্ষান্তরে দোষ চর্চাকারীর অবস্থা তো এরূপ নয়। এখানে অবশ্যই বিবেক খরচ করে কাজ করা উচিত। নফস ও প্রবৃত্তির বিপরীত চিন্তা করা উচিত। কারণ, যদি একটি গীবত ও দোষচর্চার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে তোমার অন্তরে দোষচর্চাকারীর প্রতি হিংসা ও বিদ্বেষ বাসা বেঁধে বসে, তাহলে তা তোমার জন্য কেমন দুর্ভাগ্যজনক হবে!
পারিবারিক ঝগড়া-কলহ থেকে আত্মরক্ষার আরেকটি সহজ উপায় হলো, একাধিক পরিবার বা একাধিক ব্যক্তি একই বাড়ীতে একসাথে না থাকা।
একাধিক মহিলা একসাথে থাকার ফলেই যতসব ঝগড়া-কলহ ও ফিৎনা-ফাসাদ সৃষ্টি হয়।
সূত্র : কুরআন হাদীসের আলোকে পারিবারিক জীবন
The post পারিবারিক ঝগড়া হতে আত্মরক্ষার উপায় appeared first on Amar Bangla Post.