22- عَنْجَابِرِبْنِعَبْدِاللَّهِرَضِيَاللَّهُعَنْهُمَا،أَنَّرَجُلاًقَالَ: ياَرَسُوْلَاللهِ! إنلِيْمَالاًوَوَلَداً،وَإِنَّأَبِيْيُرِيْدُأَنْيَجْتَاحَمَالِي؛فَقَالَ: “أَنْتَوَمَالُكَلِأَبِيْكَ”.
(سننابنماجه،رقمالحديث 2291،وصححهالألباني).
22 – অর্থ: জাবের বিন আব্দুল্লাহ [রাদিয়াল্লাহু আনহুমা]থেকে বর্ণিত। এক ব্যক্তি বলেছিলো: হেআল্লাহর রাসূল! আমার সম্পদ আছে, সন্তানও আছে। আমার পিতা আমার সমস্ত সম্পদ শেষ করে দিতে চান। তিনি বললেন:“তুমি ও তোমার সম্পদ সবই তোমার পিতার উপকারের জন্য”।
[সুনান ইবনু মাজাহ, হাদীসনং2291, আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল্ আলবাণী হাদীসটিকে সহীহ (সঠিক) বলেছেন]।* এই হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবীর পরিচয়:
জাবের বিন আব্দুল্লাহ আল্ আন্সারী একজন বিখ্যাত সাহাবী। তিনি তার পিতাসহ আকাবার রাতে আল্লাহর নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সাথে বাইয়াত গ্রহণ করেছিলেন। এবং বাইয়াতে রিজওয়ানেও তিনি উপস্থিত (শামিল) ছিলেন। তিনি বেশী হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবীগণের অন্তর্ভুক্ত। তার বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা হলো 1540 টি। তিনি সন 73 হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন। এই বিষয়ে অন্য উক্তিও রয়েছে।
* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:
1। এই হাদীসটির দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, সন্তানের উপার্জিত মাল হতে পিতা ভক্ষণ করতে পারে; কেননা প্রকৃত ইসলামের শিক্ষার আলোকে সন্তানের উপার্জিত মাল পিতার পবিত্র উপার্জিত মালের অন্তর্ভুক্ত সম্পদ বলেই বিবেচিত। তবে জেনে রাখতে হবে যে, ছেলের উপার্জিত মালের প্রকৃত মালিক তার পিতাকে করা হয় নি। যেহেতু ছেলের উপার্জিত মালের প্রকৃত মালিক হলো স্বয়ং ছেলে নিজেই। তাই তাকেই তার মালের জাকাতও প্রদান করতে হবে এবং সে মৃত্যুবরণ করলে তার ত্যাজ্যসম্পত্তি তার উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বন্টন করতে হবে। অতএব এই হাদীসটি ওই সমস্ত পিতামাতার প্রতি প্রযোজ্য,যে সমস্ত পিতামাতা প্রকৃতপক্ষে বিত্তহীন বা অভাবগ্রস্ত। তাই বিত্তহীনপিতামাতার ভরণপোষণ বহন করা সন্তানের অপরিহার্য একটি কর্তব্য।
2।সন্তানের প্রয়োজনীয় সম্পদ পিতার জন্য নেওয়া জায়েজ নয়। কিংবা ছেলের ওই সমস্ত সম্পদ পিতা নিতে পারবে না, যে সমস্ত সম্পদ নিলে ছেলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। অনুরূপভাবে পিতা একটি ছেলের সম্পদ নিয়ে অকারণে অন্য আরেকটিছেলেকে প্রদান করতে পারে না। তাই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনের মধ্যে বলেছেন:
(وَلِأَبَوَيْهِلِكُلِّوَاحِدٍمِنْهُمَاالسُّدُسُمِمَّاتَرَكَإِنْكَانَلَهُوَلَدٌ؛فَإِنْلَمْيَكُنْلَهُوَلَدٌوَوَرِثَهُأَبَوَاهُفَلِأُمِّهِالثُّلُثُ) …،سورةالنساء،جزءمنالآية 11.
ভাবার্থের অনুবাদ:“মৃতের পিতামাতার মধ্য থেকে প্রত্যেকের জন্য ত্যাজ্য সম্পত্তির মধ্যে মাত্র ছয় ভাগের এক ভাগরয়েছে, যদি মৃতের পুত্র থাকে তবেই। তাই যদি মৃতের পুত্র না থাকে এবং পিতামাতাই ওয়ারিস ও উত্তরাধিকারী হয়, তাহলে মাতা পাবে মাত্র তিন ভাগের এক ভাগ”। …
(সূরা সুরা আন্নিসা, আয়াতনং 11এর অংশবিশেষ)।
সুতরাং এই আয়াতটির দ্বারা প্রমাণিত হয় যে,ছেলের উপার্জিত মালের প্রকৃত মালিক স্বয়ং ছেলে নিজেই, তার পিতা তার মালের প্রকৃত মালিক নয়।আরউত্তরাধিকারী হিসেবে পিতা সেই পরিমাণে ছেলের ত্যাজ্য মালের অধিকারী হতে পারবে, যেই পরিমাণের কথা এই আয়াতের মধ্যে নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই নির্দিষ্ট অংশ ছাড়া পিতার জন্য অন্য কোনো অংশ নেই। তাই এই হাদীসটিরভাবার্থ হলো এই যে, পিতা যদি বৈভবশালী না হয়, তাহলে সে তার ছেলের মাল থেকে প্রয়োজন মত কিছু মাল নিতে পারে এমন একটি পদ্ধতিতে, যেই পদ্ধতিতে ছেলের ক্ষতি সাধন হবে না।
3। এই হাদীসটিরমধ্যে যে লাম অক্ষরটি ব্যবহার করা হয়েছে ” لأبيك” শব্দটির মধ্যে, সেই লাম অক্ষরটি পিতাকে তার ছেলের মালের মালিকানাপ্রদান করার জন্য ব্যবহার করা হয় নি। কিন্তু ছেলের মালের দ্বারা পিতাকে তার প্রয়োজনবোধে এমন পদ্ধতিতে উপকৃত হওয়ার অধিকার প্রদান করা হয়েছে, যেই পদ্ধতিতে ছেলের কোনো প্রকারের ক্ষতি সাধন হবে না। এর প্রমাণ হলো এই যে, ছেলে যখন মৃত্যুবরণ করবে, তখন তার উত্তরাধিকারী হবে তার সন্তান সন্ততি, তার স্ত্রী, তার মাতা এবং তার পিতা । তাই এখানে বলা যায় যে, যদি ছেলের মালের মালিক তার পিতাই হতো, তাহলে তার পিতা ছাড়া অন্য কোনো মানুষ তার মালের উত্তরাধিকারী হতে পারতো না, সমস্ত মালের মালিক কেবল তার পিতাই হয়ে যেত, কিন্তু তা হয় নি বরং তার উত্তরাধিকারী হিসেবে অন্য লোকও নির্দিষ্ট রয়েছে।
সূত্র : নির্বাচিত হাদীস পঞ্চম খন্ড
এই হাদীসটি আপনার পরিবার-পরিজন ও বন্ধুদের কে পড়াতে শেয়ার করুণ। পবিত্র ইসলামের আলোয় আলোকিত হোক সবার জীবন।
The post পিতা প্রয়োজন অনুযায়ী ছেলের সম্পদ নিতে পারবে appeared first on Amar Bangla Post.