সম্প্রতি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশের সব স্কুল ও কলেজে আড়ম্বপূর্ণভাবে বর্ষবরণ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে বাংলা নববর্ষ পালনে বাধ্যবাধকতা আরোপ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয় স্কুল কলেজ পর্যায়ে বর্ষবরণ আয়োজনের।
আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর গত ১৬ মার্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) থেকে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়। মাউশি’র সহকারী পরিচালক (এইচআরএম) আশেকুল হক স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশনায় বলা হয়, বাংলা নববর্ষ ১৪২৪ আয়োজন উপলক্ষে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে পহেলা বৈশাখে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উৎসবমুখর পরিবেশে ও আড়ম্বরের সঙ্গে বাংলা বর্ষবরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ইউনেস্কো কর্তৃক মঙ্গল শোভাযাত্রা’কে বিশ্বঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করায় বিষয়টি গুরুত্বসহ উদযাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এমতাবস্থায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের আওতাধীন সব প্রতিষ্ঠান প্রধানকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এ অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। তথ্য সূত্রঃ বাংলা ট্রিবিউন।
ভালো কথা। তবে, বর্ষবরণের নামে এসব পেছনে কোটি কোটি টাকা খরচ করে কি লাভ টা হবে? প্রত্যেক বছরেই তো এসব করা হয়? এসব করে কি আমাদের দেশের আজও কোনো মঙ্গল হয়েছে? যেখানে আমাদের দেশের একটি শ্রেণী এখনো ভিক্ষা করে খায়, আরেকটি শ্রেণীর নারী ইজ্জত বিকিয়ে নিজের সংসার চালায়। গ্রাম গঞ্জের রাস্তা ঘাটের বেহাল দশা রেখে কি মঙ্গল শোভা যাত্রা করে দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে? নাকি আসছে কাল বৈশাখীর ঝড়-তুফানের ক্ষতির পরিমাণ কমানো যাবে? এর কোনটাই হবে না। তাহলে এসবের পেছনে এতো বিপুল পরিমাণের অর্থ খরচ করার কোন মানে হয় না।
অপর দিকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বাঙ্গালীর সংস্কৃতির অংশ নয়। এটি একটি ভুয়া ইতিহাস। মূলত ১৯৮০ সালে ঢাকা শহরে এটির প্রবর্তিত হয়। উইকিপিডিয়া'র তথ্য অনুযায়ী প্রথম দিকে এর নাম মঙ্গল শোভাযাত্রা ছিল না। ১৯৮০ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত এটিকে আনন্দ শোভাযাত্রা হিসেবে পালন করা হতো। পরে ১৯৯৬ সালে হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে মিল এর নাম পরিবর্তন করে মঙ্গল শোভাযাত্রা করা হয় । তাহলে এটি হাজার বছরের সংস্কৃতি হলো কি করে? এতো এখনো হাফ সেঞ্চুরিও পূরণ করতে পারেনি।
অপর দিকে মঙ্গল শোভাযাত্রা পালনের যেসব উপকরণ রয়েছে তা সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী এবং প্রতিকৃতি বানিয়ে তার মাধ্যমে মঙ্গল কামনা করা হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় রীতিনীতি।
তাহলে ৯০ শতাংশ মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতি আঘাত দিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার নামের মূর্তি পূজায় লিপ্ত হতে বাধ্য করা হচ্ছে কাদেরকে খুশি করার জন্য? কাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য মুসলিমদের ভিতরে মূর্তিপূজার কুফরি প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে?
যখন হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব শুরু হয় তখন তাকে সর্বজনীয় উৎসব হিসেবে প্রচার করা হয়। মুসলিমদেরকে পূজায় শামিল করার জন্য তার সাথে আরো প্রচার করা হয় ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। কিন্তু মুসলিম সম্প্রদায়ের উৎসবের সময় এমনটি কখনো বলা হয় নি। তাতে কি বুঝা গেল, হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা যা করে সেটাই উৎসব। অপর দিকে মুসলিমরা বছরে মাত্র দুইটি আনন্দের দিন পালন করে তবু সেটা তাদের কাছে কোন গ্রহণ যোগ্যতা নেই। এতে বুঝা যায় বাংলাদেশের হিন্দুরা ধর্মীয় উৎসব পালনে দেউলিয়া হয়েছে গেছে, মুসলিমদের ছাড়া তাদের পূজায় লোক বারী হয় না। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের বাস্তবতা।
এই আদেশে এটি স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, যখন যখন ধর্ম যার যার, উৎসব সবার বলেও বাংলাদেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের সব শ্রেণী পেশার লোকজনকে তাদের পূজায় শামিল করা গেলা, তখন বাঙ্গালী সংস্কৃতির পালনের উদ্দেশ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রার মূর্তি মাধ্যমে মঙ্গল কামনার দ্বারা বাংলাদেশের মুসলিমকে মূর্তি পূজায় বাধ্য করা। মুসলিম সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েদের মনে মূর্তিপূজায় আসক্ত করতে স্কুল কলেজ গুলো মূলত এই আদেশ দেওয়া হয়েছে। আমি যতটুকু জানি, বাংলাদেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যেসব উচ্চ কর্মকর্তা আছেন, তাদের মধ্যে অধিকাংশ হিন্দু। তাহলে বুঝেন অবস্থা।
আরেকটি বিষয় হচ্ছে, আধুনিক বিজ্ঞানের যুগে কেউ যদি মৃত পশু-পাখির মূর্তির মাধ্যমে নতুন বছরের মঙ্গল কামনা করে, যার ভিতরে প্রাণেরই অস্তিত্ব নেই, তাকে আমরা চরম মূর্খ ছাড়া কি আর বলতে পারি? কাল বৈশাখীর অঙ্গমলের বাতাস লাগতেই এরা আকাশে উড়তে থাকবে, তাহলে আমাদের ঘর-বাড়ী রক্ষা করবে কখন?
যেবছরে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে নারীদের যৌন নিগ্রহ করা হয়, ঠিক সে বছরের একই দিনে মঙ্গল শোভাযাত্রাও করে হয়। ফলাফল কি হল, এই মঙ্গল শোভাযাত্রা নারীদেরকে যৌন নিগ্রহের হাত থেকে বাচাতে পাঁরেনি।
আমি বুঝতে পারি না, বাংলাদেশের যেসব বিজ্ঞান মনস্ক ভাই বোনেরা আছে, তারা এক্ষেত্রে নিরব কেনো? তারা তো এসবের বিশ্বাসী নয়। তাহলে তারা কি প্রাকৃতিকান্ধ?
-সৈয়দ রুবেল। (প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক : আমার বাংলা পোস্ট
The post পহেলা বৈশাখ উদযাপন! মঙ্গল শোভাযাত্রা পালনের নির্দেশ কাদের খুশি করার জন্য? appeared first on Amar Bangla Post.