Quantcast
Channel: Amar Bangla Post
Viewing all articles
Browse latest Browse all 2081

শোক ভোগ করার বিধান

$
0
0

58- عَنْأُمِّعَطِيَّةَرَضِيَاللهُعَنْهَا،قَالَتْ: قَالَالنَّبِيُّصَلَّىاللهُعَلَيْهِوَسَلَّمَ: "لاَيَحِلُّلِامْرَأَةٍتُؤْمِنُبِاللَّهِوَاليَوْمِالآخِرِ،أَنْتُحِدَّفَوْقَثَلاَثٍإِلاَّعَلَىزَوْجٍ؛فَإِنَّهَالاَتَكْتَحِلُوَلاَتَلْبَسُثَوْبًامَصْبُوغًا،إِلاَّثَوْبَعَصْبٍ".

(صحيحالبخاري،رقمالحديث 5342).

58 – অর্থ:  উম্মু আতিয়া [রাদিয়াল্লাহু আনহা] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন:“যে মহিলা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান ও বিশ্বাস স্থাপন করে, সে যেনতার স্বামী ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির মৃত্যুতে তিন দিনের বেশি শোক ভোগ না করে। তাই সে তার স্বামীর মৃত্যু বরণ করার পর শোক ভোগ করার সময় সুরমা ব্যবহার করবে না। এবং এই শোক ভোগ করার সময় কোনো  রঙিন  কাপড়  পরিধান  করবে  না,  শুধুমাত্র এমন এক সাদা  কাপড় পরবে, যে কাপড়টি কে সুন্দর তা প্রকাশ করার জন্য তৈরি করা হয়নি”।[সহীহ বুখারী, হাদীস নং 5342]।

* এই হাদীস বর্ণনাকারিণী  সাহাবীয়ার পরিচয়:

নুসাইবা বিনতুল হারিস আল আনসারী সাহাবীয়া, তাঁর ডাক নাম উম্মু আতিয়া [রাদিয়াল্লাহু আনহা]।তিনি ওই সমস্ত মহিলা সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যাঁরা মহান আল্লাহর পথে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। তাই তিনি তাঁর ডাক নামেই বেশি প্রসিদ্ধা ছিলেন। এবং তাঁর প্রকৃত নাম সম্পর্কে বলা হয়েছে: নুসাইবা বিনতুল হারিস, আবার এটাও বলা হয়েছে যে, তাঁর প্রকৃত নাম হলো নুসাইবা বিনতু কায়াব।

নুসাইবা বিনতুল হারিস যেহেতু ওই সমস্ত মহিলা সাহাবীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যাঁরা মহান আল্লাহর পথে বিভিন্ন যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছেন। আর আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সাথে তিনি সাতটি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছেন। তাই তিনিআহতদের চিকিৎসা করতেন এবং রোগীদের সেবা-শুশ্রুষা ও দেখা-শুনা করতেন। আর মৃত ব্যক্তিদের মৃতদেহগুলিকে মাদীনা মুনাওয়ারা নিয়ে যেতেন। সুতরাং হাদীসের মধ্যে এসেছে:

عَنْأُمِّعَطِيَّةَالْأَنْصَارِيَّةِرَضِيَاللهُعَنْهَا،قَالَتْ: غَزَوْتُمَعَرَسُولِاللهِصَلَّىاللهُعَلَيْهِوَسَلَّمَسَبْعَغَزَوَاتٍ،
أَخْلُفُهُمْفِيرِحَالِهِمْ؛فَأَصْنَعُلَهُمُالطَّعَامَ،وَأُدَاوِيالْجَرْحَى،وَأَقُوْمُعَلَىالْمَرْضَى.

(صحيحمسلم،رقمالحديث 142 – (1812)، ).

অর্থ:  উম্মু আতিয়া আল আনসারী সাহাবীয়া [রাদিয়াল্লাহু আনহা] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আমি আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সঙ্গে সাতটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। আমি তাঁদের আবাসে বা থাকার জায়গাতে ও বাসস্থানে অবস্থান করতাম। তাদের খাবার তৈরি করতাম, আহতদের চিকিৎসা করতাম এবং রোগীদের সেবা-শুশ্রুষা ও দেখা-শুনা করতাম। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং 142 -(1812) ]।

উম্মু আতিয়া ছিলেন একজন প্রসিদ্ধা বিচক্ষণা বুদ্ধিমতী মহা সম্মানিতা মহিলা সাহাবীয়া। তিনি আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সঙ্গে থেকে আল্লাহর পথে যুদ্ধ করার মহা মর্যাদা লাভ করেছেন। অনুরূপভাবে মুসলমানদের মধ্যে তিনি প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা ও আইনশাস্ত্র প্রচারের মহা মর্যাদাও লাভ করেছেন। এই মহা মর্যাদা খুব কম সংখ্যক মহিলা লাভ করতে পেরেছেন। আর আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর কন্যা জায়নাবের মৃত্যুবরণ করার পর তাঁকে তিনিই গোসল দিয়েছিলেন।

আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] মৃত্যু বরণ করার পর তিনি তাঁর জীবনের শেষ দিকে বাসরা শহর চলে যান। সেই বাসরা শহরে অনেক সাহাবী, তাবেয়ী এবং বিভিন্ন প্রকারের লোকজন তাঁর মাধ্যমে প্রকৃত ইসলামের শিক্ষা ও বিধিবিধানের জ্ঞান লাভ করেন। বিশেষভাবে তাঁরা তাঁর কাছ থেকে জানাজার নামাজের নিয়ম এবং মৃত ব্যক্তিদেরকে গোসল দেওয়ার প্রণালীর বিষয়ে বিশিষ্ট ভাবে জ্ঞান লাভ করেন। তাঁর বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা 40 টি।

তিনি প্রায় সন 70 হিজরী পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। [রাদিয়াল্লাহু আনহাওয়াআরদাহা]।

* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

1। শোক ভোগ করার অর্থ হলো:স্বামীর মৃত্যু বরণ করার কারণে স্ত্রীর মনে মানসিক যন্ত্রণা বা দুঃখ সৃষ্টি হওয়ার ফলে তার বিধবা হওয়ার পর ইদ্দতের মধ্যে (নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে) সে নিজের শরীরে এবং কাপড়ে সমস্ত প্রকারের সাজ সজ্জা বর্জন করবে। সুতরাং উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে যে, সে তার ইদ্দতের মধ্যে সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য সুরমা কাজল, রং এবং পাউডার ব্যবহার করতে পারে না; যেহেতু এই সমস্ত জিনিস সাধারণ ভাবে নারী তার স্বামীর জন্য ব্যবহার করে থাকে। অনুরূপভাবে সে সকলপ্রকারের সুগন্ধি, পারফিউম, গয়না,  উজ্জ্বল কাপড়-চোপড় ব্যবহার করতে পারে না। তবে জেনে রাখা উচিত যে, শোক ভোগ করার জন্য বিশেষ কোনো রং এর বিশিষ্ট কোনো কাপড় নেই।

2। যে মহিলার স্বামী মৃত্যু বরণ করেছে, সে মহিলা তার স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশ দিন শোক পালন করবে। কিন্তু সে যদি গর্ভবতী বা অন্তঃসত্বা হয়, তাহলে তার শোক ভোগ করার সময় হলো সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় পর্যন্ত। সুতরাং যে মহিলার যখনই সন্তান ভূমিষ্ঠ হবে, সে মহিলার তখনই ইদ্দত (নির্দিষ্ট সময়) পালনের সময় সীমা শেষ হয়ে যাবে।সেই ইদ্দত (নির্দিষ্ট সময়) পালন স্বামীর মৃত্যুবরণের কারণে হোক অথবা স্বামীর  কাছ থেকে তালাক পাওয়ার কারণে হোক। যখনই গর্ভবতী মহিলার সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়ে যাবে তখনই তার ইদ্দত (নির্দিষ্ট সময়) শেষ হয়ে যাবে। যদিও তার সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় নয় মাস গর্ভধারণ করার পূর্বে।

3। অনুরূপভাবে যে মহিলার স্বামী মৃত্যু বরণ করবে, সে মহিলা তার স্বামীর মৃত্যুবরণ করার কারণে চার মাস দশ দিন শোক পালন করবে।যদিও ইসলামী বিধান অনুসারে তাদের বৈধভাবে বিবাহ হওয়ার পর তাদের  মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও যৌনমিলন সংঘটিত হয়নি।

4। মহিলার স্বামী ছাড়া অন্য কোনো লোক মৃত্যু বরণ করলে, তার জন্য শোক পালন করা বৈধ রয়েছে, তবে ওয়াজেব বা অপরিহার্য নয়।কিন্তু এই ক্ষেত্রে তিন দিনের বেশি তার জন্য শোক পালন করা বৈধ নয়। সুতরাং কোনো মহিলার কোনো সন্তান মৃত্যু বরণ করলে, তার জন্য মাত্র তিন দিন শোক পালন করা বৈধ রয়েছে। তবে এই ক্ষেত্রে শোক ভোগ করার উদ্দেশ্যে কোনো মহিলার প্রতি তার নিজের শরীরে এবং কাপড়ে কোনো প্রকারের সাজ সজ্জা বর্জন করা এবং বাইরে না যাওয়া ওয়াজেব ও অপরিহার্য নয়।

5। পুরুষ ব্যক্তির প্রতি কোনো অবস্থাতে শোক পালন করার কোনো বিধান নেই।

সূত্র : নির্বাচিত হাদীস পঞ্চম খন্ড

এই হাদীসটি আপনার পরিবার-পরিজন ও বন্ধুদের কে পড়াতে শেয়ার করুণ। পবিত্র ইসলামের আলোয় আলোকিত হোক সবার জীবন।

The post শোক ভোগ করার বিধান appeared first on Amar Bangla Post.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 2081

Trending Articles